প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যায় অনেকেই ভুগেন। অহেতুক লাজ-লজ্জায় কাউকে বলেন না। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে।

প্রোস্টেট পুরুষদের ইন্টারনাল অর্গানের মধ্যে গুরুত্বর্পূণ অঙ্গ। এটি একটি সুপারির মতো মাংসপিণ্ড, যা পুরুষের মূত্রথলির নিচে মূত্রনালিকে ঘিরে থাকে। এর প্রধান কাজ শুক্রাণুর জন্য খাদ্যের যোগান দেওয়া।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডা. এস এম আব্দুল আজিজ।

প্রস্টেট কী? এর কাজ কী?
মূত্রায়শের নিচে থাকে প্রস্টেট। দেখতে অনেকটা সুপারির মতো আকৃতির। এটি একটা যৌনাঙ্গ, কেবল পুরুষদের আছে। এটি প্রজননকালীন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এটি সময়ের সঙ্গে বড় হয়ে যায়।
৪০ বছর বয়স থেকে প্রস্টেট বড় হতে থাকে। ৬০–৬৫ বছর বয়সে যথেষ্ট বড় হয়ে যায়। এটা একসময় কঠিন সমস্যার সৃষ্টি করে। অনেক সময় প্রস্রাবের গতি ধীর হতে হতে বন্ধও হয়ে যায়। এমনকি প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের ভেতরে ক্যানসারও সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে নল দিয়ে প্রসাব বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। অনেকের অপারেশনের দরকার হতে পারে

বৃদ্ধির কারণ : বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেহের হরমোনেও কিছু কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে। হরমোনের এই পরিবর্তনকেই প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধির কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়। পঞ্চাশ ঊর্ধ্বো প্রায় সব পুরুষের প্রোস্টেট বড় হতে থাকে কিন্তু সবার উপসর্গ দেখা দেয় না।

বৃদ্ধির ফলাফল : প্রথমত, মূত্রনালির চারদিকে প্রোস্টেটের কোষ সংখ্যা বেড়ে মূত্রনালিকে চেপে ধরে।

দ্বিতীয়ত, প্রোস্টেট গ্রন্থির মধ্যভাগ বৃদ্ধি পেয়ে মূত্রনালির বাহির পথকে আটকে দেয়। ফলে মূত্রথলি থেকে সহজে প্রস্রাব বের হতে পারে না।

উপর্সগ : ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব করার পরও প্রস্রাবের থলি খালি না হওয়া, প্রস্রাবের বেগ আটকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়, প্রস্রাবের গতি দুর্বল ও মাঝপথে বন্ধ হয়, প্রস্রাবের থলি বেশি ভরে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হয় ও অনেক সময় প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যায়।

প্রস্রাব একেবারে আটকে যাওয়া বা আটকানোর মতো হয়। হঠাৎ করে প্রস্রাব আটকে গেলে তলপেটে তীব্র ব্যথা ও প্রচণ্ড প্রস্রাবের চাপ অনুভূত হয়। প্রোস্টেটজনিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বিশেষত রাতে।

চিকিৎসা : চল্লিশোর্ধ্বে পুরুষদের বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি প্রোস্টেট-পরীক্ষা করানো উচিত। প্রোস্টেট গ্রন্থি বাড়লে অনেক সমস্যা হতে পারে। প্রোস্টেটের সমস্যাকে হালকা করে দেখা উচিত নয়। এই গ্রন্থটি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়। এই বৃদ্ধি কারও কারও ক্ষেত্রে অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং কারও কারও ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করে না বা সামান্য অসুবিধা সৃষ্টি করে।

ক্ষেত্রবিশেষ প্রোস্টেট বৃদ্ধিজনিত উপসর্গগুলো মেডিসিন প্রয়োগের মাধ্যমে উপশম লাভ করা যায়। ওষুধ প্রোস্টেটের মাংশপেশিগুলো শিথিল করে প্রস্রাবের বাধা দূর করে।